গাজায় যুদ্ধবিরতির ‘রোডম্যাপ’ দিলেন বিদায়ী মার্কিন প্রেসিডেন্ট জো
- By Jamini Roy --
- 17 January, 2025
বিশ্বব্যাপী আলোচনার কেন্দ্রে এখন গাজার দীর্ঘ প্রতীক্ষিত যুদ্ধবিরতি। টানা ১৫ মাস ধরে চলা সংঘর্ষে হাজার হাজার মানুষের মৃত্যু, লাখো মানুষের বাস্তুচ্যুতি এবং ভয়াবহ ধ্বংসযজ্ঞের পর এই চুক্তি সবার মাঝে আশার আলো দেখাচ্ছে। বিদায়ী মার্কিন প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন জানিয়েছেন, তিনটি ধাপে এ যুদ্ধবিরতি বাস্তবায়ন করা হবে।
বাইডেন বুধবার এক সংবাদ সম্মেলনে বলেন, “প্রথম ধাপে ছয় সপ্তাহের যুদ্ধবিরতি কার্যকর হবে এবং এর সঙ্গে বন্দি বিনিময়ের প্রক্রিয়া শুরু হবে। দ্বিতীয় এবং তৃতীয় ধাপের কাজগুলোর লক্ষ্য হবে গাজায় স্থায়ী শান্তি নিশ্চিত করা।”
প্রথম ধাপ: ছয় সপ্তাহের যুদ্ধবিরতি
আগামী ১৯ জানুয়ারি থেকে গাজায় যুদ্ধবিরতি কার্যকর হবে। প্রথম ধাপে:
- ছয় সপ্তাহের জন্য সম্পূর্ণ হামলা-সংঘাত বন্ধ থাকবে।
- হামাস প্রতিদিন নির্দিষ্ট সংখ্যক বন্দি মুক্তি দেবে। প্রথম দিন মুক্তি পাবে তিনজন জিম্মি, আর ছয় সপ্তাহে পর্যায়ক্রমে ৩৩ জন।
- ত্রাণ কার্যক্রমের অনুমতি: প্রতিদিন ৬০০টি ত্রাণবাহী ট্রাক গাজায় প্রবেশের অনুমতি পাবে।
- উত্তর গাজার বাসিন্দাদের ঘরে ফেরার অনুমতি দেওয়া হবে।
- রাফাহ সীমান্ত খোলা: যুদ্ধবিরতির সাত দিনের মধ্যে রাফাহ সীমান্ত খুলে দেওয়া হবে। আহত ফিলিস্তিনিরা চিকিৎসার জন্য বাইরে যেতে পারবেন।
- ইসরাইলি সেনা প্রত্যাহার: মিশর-গাজার ফিলাডেলফি করিডোর থেকে ৫০ দিনের মধ্যে ইসরাইলি বাহিনী পুরোপুরি সরে যাবে।
দ্বিতীয় ধাপ: স্থায়ী শান্তির পথে
প্রথম ধাপের ছয় সপ্তাহ শেষে দ্বিতীয় ধাপ শুরু হবে।
১. এ পর্যায়ে যুদ্ধবিরতির স্থায়ী রূপ দেওয়ার পরিকল্পনা কার্যকর হবে।
২. অবশিষ্ট বন্দি মুক্তি দেওয়া হবে।
৩. ইসরাইলি কারাগার থেকে এক হাজারের বেশি ফিলিস্তিনি বন্দি মুক্তি পাবে।
তৃতীয় ধাপে গাজার পুনর্গঠন এবং প্রশাসনিক কাঠামো স্থাপন করা হবে।
- মরদেহ হস্তান্তর: অবশিষ্ট জিম্মিদের মরদেহ হস্তান্তর করা হবে।
- পুনর্গঠনের পরিকল্পনা: আন্তর্জাতিক তত্ত্বাবধানে গাজার অবকাঠামো পুনর্গঠন শুরু হবে।
- নতুন প্রশাসন গঠন: যুক্তরাষ্ট্র একটি অন্তর্বর্তীকালীন প্রশাসন গঠনের প্রস্তাব দিয়েছে। এতে ফিলিস্তিনি কর্তৃপক্ষ এবং আন্তর্জাতিক অংশীদারদের ভূমিকা থাকবে।
যদিও আরব দেশগুলো এই পরিকল্পনায় সমর্থন জানিয়েছে, তারা এটিকে ফিলিস্তিনি রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠার পথ সুগম করার শর্তে সমর্থন করবে বলে জানিয়েছে। এদিকে, গাজায় কারা প্রশাসন পরিচালনা করবে, তা নিয়ে এখনও বিতর্ক রয়েছে।
বাইডেন বলেন, “এই চুক্তি শুধু একটি বিরতি নয়, এটি দীর্ঘমেয়াদী শান্তির দিকে প্রথম পদক্ষেপ। আমি আশা করি, এই চুক্তি ইসরাইলি ও ফিলিস্তিনিদের মধ্যকার ইতিহাসের সবচেয়ে অন্ধকার অধ্যায়ের সমাপ্তি ঘটাবে।”